সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

যুবক-যুবতীদের জিজ্ঞাস্য

ডেটিং—ভাগ ১: আমি কি ডেটিং করার জন্য প্রস্তুত?

ডেটিং—ভাগ ১: আমি কি ডেটিং করার জন্য প্রস্তুত?

 ডেটিং করার মানে কী?

 অনেক লোক মনে করে, ডেটিং করার মানে হল বয়ফ্রেন্ড বা গার্লফ্রেন্ড থাকা এবং তার সঙ্গে হাত ধরে ঘুরে বেড়ানো। এই প্রবন্ধে আমরা জানতে পারব, ডেটিং করার মানে কী। এটা হল এমন এক সময়, যখন একটা ছেলে ও মেয়ে একসঙ্গে সময় কাটায় এবং বোঝার চেষ্টা করে যে, তারা একে অন্যের ভালো জীবনসঙ্গী হতে পারবে কি না। তাই এর মানে এই দাঁড়ায়, ডেটিং করার পিছনে এক বিশেষ উদ্দেশ্য রয়েছে। এটা টাইম পাস করার মতো কোনো বিষয় নয় অথবা কেউ তোমার প্রতি মনোযোগ দিচ্ছে আর তোমার খুব ভালো লাগছে বলেই যে তোমাকে ডেটিং করতে হবে, এমনও নয়।

 যখন একটা ছেলে ও মেয়ে ডেটিং করে এবং একে অন্যকে আরও ভালোভাবে জানতে শুরু করে, তখন এর কিছুসময় পর তাদের একটা সিদ্ধান্ত নিতে হয়: তারা কি বিয়ে করবে, না কি ব্রেকাপ করবে? তুমি যদি কারো সঙ্গে ডেটিং করতে চাও, তা হলে তোমাকে এই দুটো বিষয়ের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।

 মূল কথা: তোমার যদি মনে হয় যে, তুমি বিয়ের জন্য প্রস্তুত, তা হলেই ডেটিং করার বিষয়ে চিন্তা করো।

কেউ যদি বিয়ে করতে না চায়, কিন্তু ডেটিং করে, তা হলে সে এমন একজন ব্যক্তির মতো হবে, যে চাকরি করতে চায় না, কিন্তু ইন্টারভিউ দিতে গিয়েছে

 তুমি কি ডেটিং করার জন্য প্রস্তুত?

 বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, যখন দু-জন ব্যক্তি ডেটিং করে, তখন তাদের বিয়ে হয়। তাই, তোমাকে চিন্তা করতে হবে, ‘আমার মধ্যে কি সেই গুণগুলো রয়েছে, যেগুলো আমার বিবাহিত জীবনকে সফল করবে?’ নীচে দেওয়া কিছু বিষয় নিয়ে চিন্তা করো:

  •    পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তোমার সম্পর্ক কেমন? তুমি তোমার বাবা-মা এবং তোমার ভাই-বোনদের সঙ্গে যেভাবে আচরণ কর, বিশেষ করে যখন তুমি চাপের মধ্যে থাক, সেটা থেকে বোঝা যাবে যে, তুমি তোমার জীবনসঙ্গীর সঙ্গে কীভাবে আচরণ করবে।

     বাইবেলের নীতি: “তোমাদের মধ্য থেকে সমস্ত ধরনের চরম তিক্ত মনোভাব, রাগ, ক্রোধ, চিৎকার-চেঁচামেচি এবং নিন্দামূলক কথা আর সেইসঙ্গে অন্যান্য সমস্ত ধরনের মন্দ বিষয় দূর করো।”—ইফিষীয় ৪:৩১.

     নিজেকে জিজ্ঞেস করো: ‘আমার বাবা-মা আর আমার ভাই-বোনদের যদি জিজ্ঞেস করা হয় যে, আমি তাদের সঙ্গে ভালো আচরণ করি কি না, তা হলে তারা কী বলবে? আমি যখন তাদের সঙ্গে একমত হই না, তখন আমি কি মাথা ঠাণ্ডা রেখে কথা বলি, না কি আমি রেগে যাই আর ঝগড়া করি?’

    সমস্যার সময়ে তুমি যদি তোমার বাবা-মায়ের সঙ্গে মাথা ঠাণ্ডা রেখে কথা বলতে না পার, তা হলে তুমি কি তোমার জীবনসঙ্গীর সঙ্গে তা করতে পারবে?

  •    তুমি কি অন্যদের বিষয়ে চিন্তা করো? তুমি যখন বিয়ে করবে, তখন তোমাকে চিন্তা করতে হবে যে, তোমার সঙ্গী কী চায় এবং কখনো কখনো তোমার সঙ্গীর পছন্দকে প্রথমে রাখতে হবে, তোমার পছন্দকে নয়।

     বাইবেলের নীতি: “প্রত্যেকে কেবল নিজের উপকারের জন্য চেষ্টা না করুক, কিন্তু অন্যের উপকারের জন্য চেষ্টা করুক।”—১ করিন্থীয় ১০:২৪.

     নিজেকে জিজ্ঞেস করো: ‘আমি কি সবসময় আমার মতো করে কাজ করার জন্য অন্যদের জোর করি? অন্যেরা কি বলবে যে, আমি মেনে নিতে ইচ্ছুক থাকি? আমি কোন কোন উপায়ে দেখাই যে, আমি শুধু নিজের বিষয়েই নয়, কিন্তু অন্যদের বিষয়েও চিন্তা করি?’

  •    তুমি কি নম্র? একজন ভালো জীবনসঙ্গী সবসময় নিজের ভুলগুলো মেনে নেয় এবং মন থেকে ক্ষমা চায়।

     বাইবেলের নীতি: “আমরা সকলে বিভিন্ন সময় ভুল করে থাকি।”—যাকোব ৩:২.

     নিজেকে জিজ্ঞেস করো: ‘আমি কি আমার ভুলগুলো মেনে নিই, না কি সবসময় অজুহাত দেখাই? কেউ যখন আমার ভালোর জন্য আমাকে কিছু পরামর্শ দেয়, তখন কি আমার খারাপ লাগে?’

  •    টাকাপয়সার বিষয়ে তুমি কী চিন্তা কর? প্রায়ই দেখা গিয়েছে, টাকাপয়সা নিয়ে অনেক স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। তাই, তুমি যদি ভেবে-চিন্তে খরচ করতে জান, তা হলে তোমার বিবাহিত জীবনে টাকাপয়সা নিয়ে কম ঝগড়া হবে।

     বাইবেলের নীতি: “তোমাদের মধ্যে কেউ যদি একটা দালান নির্মাণ করতে চায়, তা হলে সে কি প্রথমে বসে ব্যয় হিসাব করে দেখবে না যে, সেটা সম্পন্ন করার মতো যথেষ্ট টাকাপয়সা তার আছে কি না?”—লূক ১৪:২৮.

     নিজেকে জিজ্ঞেস করো: ‘আমি কি অতিরিক্ত টাকাপয়সা খরচ করার বিষয়ে নিজেকে আটকাতে পারি? আমাকে কি বার বার টাকাপয়সা ধার নিতে হয়? আমি কোন কোন উপায়ে দেখাই যে, আমি ভেবে-চিন্তে টাকাপয়সা খরচ করতে জানি?’

  •    ঈশ্বরের সঙ্গে তোমার সম্পর্ক কেমন? তুমি যদি একজন যিহোবার সাক্ষি হয়ে থাক, তা হলে ক্রমাগত বাইবেল অধ্যয়ন করার এবং সভাতে যাওয়ার এক ভালো অভ্যাস গড়ে তোলো।

     বাইবেলের নীতি: “সুখী সেই ব্যক্তিরা, যারা ঈশ্বরের কাছ থেকে নির্দেশনা লাভ করার জন্য আকাঙ্ক্ষী, কারণ স্বর্গরাজ্য তাদেরই।”—মথি ৫:৩.

     নিজেকে জিজ্ঞেস করো: ‘যিহোবার সঙ্গে নিজের সম্পর্ক মজবুত করার জন্য আমি কি প্রচেষ্টা করে চলি? আমি কি সভা, প্রচার ও অধ্যয়ন করাকে জীবনে প্রথমে রাখি, না কি আমি সবসময় অন্য বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তা করি?’

 মূল কথা: প্রত্যেকে ভালো জীবনসঙ্গী পেতে চায়। সেইজন্য নিজের মধ্যে সেই গুণগুলো গড়ে তোলো, যেগুলো তুমি তোমার জীবনসঙ্গীর মধ্যে দেখতে চাও। এভাবে, তুমি একজন ভালো জীবনসঙ্গী পেতে পার, যার মধ্যে এই গুণগুলো রয়েছে।